বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে জেলা কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন জাহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। হত্যাকাণ্ডে সহায়তা করেছেন মা ও চাচি।
শনিবার রাতে (১১ মে) রাতে সদরের হলোখানা ইউনিয়নের কাজীপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। আজ সোমবার আদালতে হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তি দেন জাহিদুল ইসলাম।
পুলিশ জানায়, রবিবার ৯৯৯ নম্বরে সংবাদ পেয়ে কুড়িগ্রামের কাজীপাড়ায় ভুট্টাখেত থেকে জান্নাতি খাতুন নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের চাচা খলিল হক বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এরপর ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ।
তদন্তের একপর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে জান্নাতির বাবা জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিবেশী মজিবর মিয়াদের ৩২ বিঘা জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পূর্বপরিকল্পনা মতো শনিবার শেষ রাতে স্ত্রী ও ভাইয়ের স্ত্রীসহ জান্নাতি খাতুনকে রড দিয়ে আঘাত করে ও দা দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে বাড়ির পাশে ভুট্টাখেতের পাশের জমিতে ফেলে রাখেন। ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য করতে বাড়ির আঙিনায় থাকা খড়ের পালায় আগুন ধরিয়ে দেন তারা। এরপর সকালে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
তদন্তের শুরুতে পুলিশ ঘটনার সূত্র পেয়ে যায় এবং চার ঘণ্টার মধ্যে আসল ঘটনা বের করে ফেলে। পরে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও ঘাতক নিহত তরুণীর বাবা জাহিদুল ইসলাম, মা মোর্শেদা বেগম ও চাচি শাহিনুর বেগমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এরপর পুলিশ বাড়ির পাশে বাঁশ বাগানের মাটির নিচ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত লোহার রড ও দা উদ্ধার করে। সোমবার সন্ধ্যায় তিন আসামিকে আদালতে তোলা হলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তারা।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার ও ওসি ডিবি বজলার রহমান বলেন, ‘মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ ও ডিবি পুলিশের একটি টিম অল্প সময়ের মধ্যে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তার করতে পেরেছেন। মামলার তদন্ত কাজ এখনও চলমান রয়েছে। আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।’